সাজেক কে আপনাদের সামনে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবার কিছুই নেই।বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান পর্যতন কেন্দ্র হিসেবে নিজেকে ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছে সাজেক।যাহোক আজকে আমি আমার সাজেক ট্যুর সম্পর্কে কিছু বেসিক আইডিয়া শেয়ার করছি।
যা যা দেখবেন
১_হাজাছড়া ঝর্ণা।
২_সাজেক ভ্যালী।
৩_কংলাক পাড়া।
৪_আলুটিলা গুহা।
৫_রিসাং ঝর্না।
কিভাবে যাবেন?
ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ির খুব বেশি বাস নেই।তবে ইগল-শান্তি পরিবহনের এসি নন এসি;সেইন্টমার্টিন-হানিফের এসি-এস আলম-সৌদিয়ার নন এসি বাস যাতায়াত করে।বাসগুলো রাত ৯ টা থেকে ১১ টার মধ্যে খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।যেকোনো একটা তে উঠে পড়ুন।আর আপনি চাইলে দিঘীনালার উদ্দেশ্যে শান্তি পরিবহণের বাসে উঠতে পারেন।নন এসি ভাড়া হবে ৫০০-৬০০ টাকা।আর এসি ৮০০-১০০০ টাকা।যাহোক খাগড়াছড়ি /দিঘীনালা পৌছে জিপ ঠিক করতে পারেন।আর আপনি চাইলে আমার থেকে আমরা যেই জিপে ঘুরেছি তার নাম্বার ও নিতে পারেন।এর ভাড়া হবে ৬-১০ হাজার টাকা দু'দিনের জন্য।আমাদের ভাড়া ছিলো ৭১০০। এক জিপে আপনি চাইলে ১০-১৪ জন পর্যন্ত ভালোভাবেই যেতে পারবেন।আর দু'দিন পর খাগড়াছড়ি থেকে রাতের বাসে ব্যাক করবেন।মিটে গেলো তো যাতায়াতের ঝামেলা?
কি?মেটেনি? ও আচ্ছা আপনার এতো বড় গ্রুপ নেই?
তাহলে কি আর করা...আপনি চাইলে ২-৩ হাজার টাকায় মোটরসাইকেলে যেতে পারবেন একা/দু'জন।অথবা ৫জন পর্যন্ত যেতে পারবেন সিএন জি তে ৩-৪ হাজার টাকা ভাড়ায়।এবার মূল পর্বে ঢোকা যাক।
.
প্রথম দিনের প্লান_
খুব সকালে দিঘীনালা/খাগড়াছড়ি নেমে ব্রেকফাস্ট করে নেবেন।তারপর ঝটপট চান্দের গাড়ি ঠিক করে ফেলুন।এখানে মনে রাখতে হবে ঢাকা থেকে রাত ১২ টায় ছাড়া গাড়ি ও জ্যাম না থাকলে ৫-৬ টায় দিঘীনালা পৌছে যায়।সকালে সেখানে খাবার আপনার বাজেট অনুযায়ী সেড়ে চান্দের গাড়ি ঠিক করে চেপে বসুন।আপনার প্রথম গন্তব্য হাজাছড়া ঝর্ণা।
দিঘীনালা বাজার থেকে ৪৫-৬০ মিনিটে চলে যাবেন হাজাছড়া।সেখান থেকে ২০ মিনিট হাটলেই ঝড়নায়।ইচ্ছেমতো ঘন্টাখানেক জমিয়ে গোসল দিয়ে নিন।এরপর ব্যাক করুন মেইন রোডে ১০ টার মাঝে।সেখাম থেকে সেনাবাহিনীর ক্যাম্পের অনুমতি নিয়ে ১০ টার মাঝে যাত্রা করুন সাজেকের উদ্দেশ্যে।সাজেক পৌছাতে পৌছাতে হয়তো ১:৩০ বেজে যাবে।আগে থেকে বুক করে রাখা হোটেলে উঠে পড়ুন।এক্ষেত্রে নাম্বারের জন্য তাদের ফেসবুক পেজ গুলো ফলো করতে পারেন।মেঘপুঞ্জি,জুমঘর,অবকাশ এসব থেকে ভালো ভিউ পাবেন ২৫০০-৩০০০ টাকার মাঝে।থাকতে পারবেন ৪ জন।এছাড়াও আরও বিভিন্ন রিসোর্ট আছে বিভিন্ন দামের।দেখতে পরেন চাইলে।ফ্রেশ হয়ে দুপুরে খেয়ে নিন মনটানা তে।খাবারের স্বাদ অন্তত একবার টেস্ট করা উচিত।তবে দামটা বেশি হবে।২৫০-৩০০ টাকা লাগবে পার পার্সন বাশ মুরগি-বাশ ভাজি-শুটকি ভর্তা ডাল ভাত এগুলো খেতেই।খাবার শেষ করে ২:৩০ টার মাঝে রুমে ফিরে যান।ঘুম দিন একটা ২ ঘন্টার জন্য।৪:৩০ এ উঠে ফ্রেশ হয়ে নিন তারপর পায়ে হেটে সাজেক জয় করতে বেরিয়ে পড়ুন।হ্যালিপ্যাড;হ্যালিপ্যাডের পাশের পিকনিক স্পট সহ ২-৪ কি.মি. হেঁটে জয় করুন।আর চাইলে আপনার নেয়া বাইক-চান্দের গাড়িতেও ঘুরতে পারেন।সন্ধা কাটিয়ে ৮ টার দিকে রুমে ফিরুন।ফ্রেশ হয়ে খাবারের জন্য বাইরে চলে যান।বাজেট অনুযায়ী খেয়ে ঘুম দিন।পরদিন ৫ টায় উঠে পড়তে হবে।
.
দ্বিতীয় দিন_
খুব সকালে উঠে গাড়ি নিয়ে যাত্রা শুরু করুন কংলাক পাড়ার উদ্দেশ্যে।মেঘের ভেতর দিয়ে যাবে আপনার গাড়ি। আশেপাশে ১০ ফুট ও দেখবেন না মেঘ ভেদ করে।এভাবে চলে যান কংলাকে।খেলা করুন মেঘের সাথে ৮ টা পর্যন্ত।ফিরে আসুন আবার আপনার রিসোর্ট এলাকা রুইলুই পাড়ায়।ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট সারুন।মনটানা তে ভূনা খিচুরি ডিম ১০০ টাকা।তারপর রুমে ফিরে গোসল দিয়ে রেডি হতে হতে ১০ টা বেজে যাবে।সেখান থেকে সোজা চান্দের গাড়িতে গিয়ে বসুন। সেনাবাহিনীর চেকপোস্ট পার হয়ে চলে আসুন খাগড়াছড়ি। ১০:৩০ এ ছাড়লে দুইটার মধ্যে খাগড়াছড়ি চলে আসবেন।সেখানে দুপুরের খাবার সারুন কোথাও।তারপর আবার চান্দের গাড়ির ছাদে চেপে বসুন।
বলুন চালককে রিসাং ঝর্ণা যাবেন।সময় লাগবে আধা ঘন্টা মতো।সেখানে গোসল দিন ৩০ মিনিট।চলে আসুন আলুটিলা গুহায়।সেখান থেকে খাগড়াছড়ি শহর টা খুব দারুণ দেখায়।যাহোক আলুটিলা পর্ব শেষ করে চলে আসুন জেলা পরিষদ পার্কে। ৫:৩০ এ টিকিট বিক্রি শেষ।তাই ঢুকে পড়ুন পাঁচটার আগেই। বিকেল সন্ধা এখানপ কাটিয়ে ৮ টায় ব্যাক করুন খাগড়াছড়ি।খাওয়াদাওয়া চুকিয়ে ৯ টার বাসে চলে আসুন কংক্রিটের নগরীতে :-)।
*সাজেকের সবচেয়ে মজার পার্ট হচ্ছে বাঘাইছড়ি বাজার থেকে সাজেক পর্যন্ত রাস্তাটা;তাই এই রাস্তায় চান্দের গাড়ির ছাদে বসলে সম্পূর্ণ মজাটাই পাবেন।
*চান্দের গাড়ির ছাদে বসার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বন করুন।
*যাওয়ার সময় নিজের চোখ কে প্রশান্তি দিন ছাদে বসে কেয়ারফুলি যতোটা পারেন।আর ভিডিও টিডিও করার হলে আসার সময় করুন। প্রসেস টা অনেক ইজি হবে।কারণ যাওয়ার সময় আপনার অনেক বেশিই ভয় করবে।
*চলেন না আমরা পরিবেশের ক্ষতি না করে এই ট্রিপ টা দিয়ে আসি....দেখি আমরা পারি কি না।
*আর হ্যাঁ ছবিগুলো সব আমার ই তোলা।
0 Comments